আদি নীলকণ্ঠ টি কেবিন, যা সিলেটের লালাবাজারের শ্রীমঙ্গল সড়কে অবস্থিত, মূলত একটি চা দোকান হলেও এটি তার সাত রঙের চা (7-Color Tea)-এর জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত। এটি কেবল একটি পানীয়ের দোকান নয়, বরং পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ কেন্দ্র।
ইতিহাস এবং উৎপত্তি
আদি নীলকণ্ঠ টি কেবিন-এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন রমেশ রাম গৌড়। তার দাবি, তিনি বহু বছর গবেষণার পর এই বিশেষ ধরনের চা তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তার দোকানে প্রায়ই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং বিদেশ থেকে পর্যটকরা এই চা-এর স্বাদ নিতে আসেন।
চায়ের বিশেষত্ব
এই দোকানের মূল আকর্ষণ হলো সাত রঙের চা। একটি কাঁচের কাপে সাতটি ভিন্ন ভিন্ন রঙের স্তর থাকে, যা একে অপরের সাথে মিশে না গিয়ে আলাদাভাবে ভাসমান থাকে। এই স্তরগুলো দেখতে এতটাই আকর্ষণীয় যে অনেকে এটিকে 'তরল শিল্পকর্ম' বলেও বর্ণনা করেন।
স্বাদ ও উপাদান: প্রতিটি স্তরের স্বাদ, ঘনত্ব এবং উপাদান আলাদা। সাধারণত, সবচেয়ে নিচের স্তরটি ঘন ও মিষ্টি হয়, যা মধু বা কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে তৈরি। উপরের স্তরগুলো হালকা এবং মশলাদার হয়। এতে আদা, এলাচ, দারচিনি, লেবু এবং বিভিন্ন ধরনের চা পাতা ব্যবহার করা হয়।
তৈরির পদ্ধতি: এই চা তৈরি করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটি একটি সূক্ষ্ম পদ্ধতি যা উপাদানগুলোর ঘনত্ব এবং তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। একটি স্তর ঢালার পর তা ঠাণ্ডা হতে দেওয়া হয়, তারপর তার উপর আরেকটি স্তর ঢালা হয়। এটি একটি বিশেষ কৌশল, যা এই চা-কে অনন্য করে তোলে।
কেন আদি নীলকণ্ঠ এত বিখ্যাত?
পর্যটন কেন্দ্র: এটি শ্রীমঙ্গল-এর একটি অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। যারা শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে যান, তাদের বেশিরভাগই একবার হলেও এই চা চেখে দেখতে যান।
অনন্য অভিজ্ঞতা: এটি কেবল একটি চা পান করা নয়, বরং একটি ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা। এর রঙ, স্বাদ এবং তৈরির পদ্ধতি এটিকে সাধারণ চায়ের থেকে আলাদা করে।
গুগল ম্যাপে পরিচিতি: আদি নীলকণ্ঠ টি কেবিন গুগল ম্যাপেও একটি পরিচিত স্থান, যেখানে হাজার হাজার পর্যটক রিভিউ এবং ছবি পোস্ট করেছেন।
আদি নীলকণ্ঠ টি কেবিন তার উদ্ভাবনী ধারণার জন্য চা শিল্পে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে এবং এটি শ্রীমঙ্গলের সাংস্কৃতিক ও পর্যটন পরিচয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন